বায়েন তালাক
এফিডেভিট (রেকর্ড নং ২১৩৪, কপি নং ১৮১২৫২২-২১) এর বর্ণনা অনুযায়ী কৃত প্রশ্নের উত্তর:
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বিবাহ বন্ধন মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর একান্ত প্রয়োজন ছাড়া তা ছিন্ন করা উচিত নয়। বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করার একান্ত প্রয়োজন দেখা দিলে সেক্ষেত্রে ইসলামের মৌলিক নীতিমালা অনুসরন করেই বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করা আবশ্যক। একসাথে তিন তালাক দেওয়া ও রাগের মাথায় তালাক দেওয়া আল্লাহর নেয়ামতের নাশোকরী করার নামান্তর। যদিও এভাবে তালাক দিলে তালাক হয়ে যায়।
স্ত্রী প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তায়ালার অনেক বড় নেয়ামত। আর আল্লাহর বিধান হলো, যদি কেউ তার নেয়ামতের অবজ্ঞা করে তাহলে তিনি তার থেকে নেয়ামত ছিনিয়ে নেন। কোনো স্বামী যদি স্ত্রীকে তিন তালাক দেয় তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য ঐ স্ত্রীকে হারাম করে দিয়ে তার থেকে স্ত্রীর মত এই বৈধ ও মূল্যবান নিয়ামত ছিনিয়ে নেন। মৌখিক তালাক এবং লিখিত তালাকের বিধান সমানভাবে প্রযোজ্য।
কাজেই উল্লিখিত এফিডেভিটের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার স্ত্রীর ওপর তিন তালাক পতিত হয়েছে এবং তিনি আপনার জন্য স্থায়ীভাবে হারাম হয়ে গেছেন। এই মূহুর্তে আপনাদের স্বামী স্ত্রীর জন্য আবশ্যকীয় করণীয় হল, উভয়ে আলাদা হয়ে যাওয়া। পরস্পরের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ ও কথা-বার্তা বন্ধ করে দেওয়া।
উল্লেখ্য, স্বামীর জন্য এরূপ তিন তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে শরয়ী হালালা ব্যতীত দ্বিতীয়বার গ্রহণ করার কোন পথ নেই। শরয়ী হালালার সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে, তালাকপ্রাপ্তা নারী প্রথমে তার ইদ্দত পূর্ণ করবে, ঋতুবতী মহিলার ক্ষেত্রে ইদ্দত হল তিন ঋতু পরিমাণ সময়। গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে ইদ্দত হল, তার গর্ভস্থ সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত সময়। আর যারা ঋতুবতী নয় এবং গর্ভবতীও নয় তাদের ক্ষেত্রে ইদ্দত হলো, তিন মাস। উপরোক্ত নিয়মে ইদ্দত পালন করার পর কোন প্রকার শর্ত ছাড়াই নারী অন্য কোনো পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে। তারপর উভয়ের মধ্যে দৈহিক মিলন হওয়ার পর দ্বিতীয় স্বামী তাকে স্বেচ্ছায় তালাক দিলে অথবা তিনি (দ্বিতীয় স্বামী) মৃত্যুবরণ করলে পূর্বের ন্যায় ইদ্দত পালনের পর উভয়ে রাজী থাকলে, বিবাহের সকল শর্ত সাপেক্ষে উক্ত স্ত্রীকে প্রথম স্বামী গ্রহণ করতে পারবে। উল্লিখিত সুরত ছাড়া তাদের ঘর-সংসার করার আর কোন পথ নেই।
الأدلة الشرعية
جاء في"القرآن الكريم"في سورة البقرة رقم الآية 229-230 : اَلطَّلَاقُ مَرَّتٰنِ فَاِمۡسَاکٌۢ بِمَعۡرُوۡفٍ اَوۡ تَسۡرِیۡحٌۢ بِاِحۡسَانٍ ؕ…فَاِنۡ طَلَّقَہَا فَلَا تَحِلُّ لَہٗ مِنۡۢ بَعۡدُ حَتّٰی تَنۡکِحَ زَوۡجًا غَیۡرَہٗ ؕ
و في"صحيح البخاري" رقم الحديث 5261 في باب باب مَنْ أَجَازَ طَلاَقَ الثَّلاَثِ : عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَجُلًا طَلَّقَ امْرَأَتَهُ ثَلاَثًا، فَتَزَوَّجَتْ فَطَلَّقَ، فَسُئِلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَتَحِلُّ لِلْأَوَّلِ؟ قَالَ: «لاَ، حَتَّى يَذُوقَ عُسَيْلَتَهَا كَمَا ذَاقَ الأَوَّلُ»
و في "مختصر القدوری"صــ616 ( مكتبة التقوى) :و ان کی طلاق بائنا دون الثلاث فله أن يتزوجها في عدتها وبعد انقضاء عدتها ... وقال الشيخ محمد سليمان الهندي في شرحه : قوله دون الثلاث) لان في الثلاث حتى تنكح زوجا غيره
و في "فتح القدير" 6/236 (المكتبة الأشرفية ): والكتاب كالخطاب ... لان الكتاب من الغائب كالخطاب من الحاضر لأن النبي صلى الله عليه وسلم كان يبلغ تارة بالكتاب وتارة بالخطاب وكان ذلك سواء فى كونه مبلغا .
و في "البناية شرح الهداية" صـ١٢/١٠ ( ذكريا) : والكتاب كالخطاب إذ الكتاب من الغائب كالخطاب من الحاضر.
و في "مجمع الأنهر" 1/60 ( دار إحياء التراث) : وله أن يتزوج مبائنه بما دون الثلاث في العدة وبعدها ولا تحل الحرة بعد الثلاث .
و في "الفتاوى التاتارخانية" ٥٢٤/٤ (ذكريا) : رجل قال لامرأته أنت طالق بائن أنت طالق بائن أنت طالق بائن ؟ فقال : تقع الثلاث وإن كانت مدخولة، واحدة إن كانت غير مدخولة .
উত্তর প্রদানে
মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমী
উস্তাজুল হাদিস ওয়াল ইফতা
জামিয়া ইমাম বুখারী, উত্তরা, ঢাকা
No comments