Header Ads

স্বপ্নের ইস্তাম্বুল

পুরো বিশ্বের অব্যহত লকডাউন স্বপ্ন পুরনে সহায়ক হয়েছে। নেই কোনো পরিবেশ দূষণ। নেই কোলাহল। নেই নীরবঘাতক শব্দ দূষণও। এভাবেই এক বিকেলে আমি পৌঁছে গেলাম স্বপ্নের শহর ইস্তাম্বুলে। প্রথমেই গেলাম পার্শ্ববর্তী ইস্তাম্বুল পার্কে। পার্কের মনোরম চিত্র, নয়নাভিরাম দৃশ্য, স্নিগ্ধ বায়ূ আর প্রকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখে আমি মুগ্ধ। বিমোহিত। স্বপ্ন পুরনের তৌফিকদাতা আল্লাহ তায়ালার দরবারে শোকরগুজার করলাম।

PHOTO FROM: yummyistanbul.com
মনে হল চলমান লকডাউনের আঘাত সেখানেও কিছুটা লেগেছে। মানুষের উপস্থিতি এবং দর্শনার্থীদের সংখ্যা একেবারে হাতেগোনা। পার্কের সৌন্দর্য্যে নিজেকে স্নাত করে আমি যাব মহাসড়কে আপর পাশে থাকা লেকের পাড়ে। রাস্ত ছিল একেবারে সহজ। সেখানে যেতে প্রয়োজন হয় না কোনে গাইড কিংবা রাহবরের। কিন্তু আমার বেলায় হল তার সম্পূর্ণ উল্টো! সহজ ও নিকটবর্তী রাস্তা ছেড়ে আমি হেঁটে চললাম তুলনামূলক কঠিন ও দূরবর্তী পথে। শেষতক রাস্তা না পেয়ে অন্যের শরণাপন্ন হলাম। 
    
 স্থানীয় একজনকে পথ জিজ্ঞেস করতেই চটে গেলেন; বুঝলাম তিনি বাঙ্গালি। গাইড ছাড়া কেনো আসলাম অচেনা দেশে সেজন্য তিনি মনের খেদ মেটালেন। নিজের নাদানির কথা স্বীকার করে আবারও তার সাহায্য কামনা করলাম। কিছুটা সাহ্যয্যও করলেন। আলহামদুলিল্লাহ। উল্টোপথে আবার তাকে সাথে নিয়ে পার্কের প্রধান গেইটে পৌঁছাই। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, সেখানেও আমাদের অঞ্চলের তিন চাকা বিশিষ্ট বিশেষ যানটির দেখা পেলাম; এবং তাতে সওয়ার হয়েই গাইড আমাকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। পার্ক ও মহাসড়কের মাঝে রয়েছে একটি খাল। 
    
গাইড জানায় প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বিশেষ সহায়তায় স্থানীয় জমিতে চাষাবাদের জন্য বহুদূর থেকে এই খাল খনন করা হয়েছে। কিন্তু খালের পানি ছিল কিছুটা আমাদের বুড়িগঙ্গা ‘কালাপানি’র মতো। অপর দিকে খালের ধরনটা ছিল যাত্রাবাড়ি মাদরাসার সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া ‘অনুত্তাল’ সমূদ্রের মতো। গাইডের তথ্য মতে সমূদ্র থেকে আসা নোনা পানিতে ফসলের ক্ষতি হবে বিধায় বিশেষ পদ্ধতিতে পানিকে শোধন করে সার ও কিটনাশক মিশিয়ে তাকে চাষাবাদের উপযোগী করা হয়েছে। মাহাসড়কের অপর পাশে লেকের পাড়ে মানুষের সংখ্যাও ছিল কম। আমরা বাহন থেকে নামলাম। সময়ের কাটা তখন সন্ধা ছুইছুই। ইস্তাম্বুলের মিনারে তখনও মাগরিবের আজান ধ্বনিত হয়নি। ভাবলাম তার আগেই কিছুটা ঘুরে আসা যাক। রাস্তা পার হতে যাব; এমন সময় ফোন বেজে উঠল। দেখি, যিনি দেওয়ার তিনিই দিয়েছেন। বললাম এই তো এখনই ফিরছি। হঠাৎ ঘড়ির কাটায় নজর পড়ল। দেখি সকাল ০৮:১৫ মিনিট। আমি শুয়ে আছি আমার বিছানায়।

2 comments:

Powered by Blogger.