মদ্যপ অবস্থায় তালাক
নেশাগ্রস্থ ও মাতাল অবস্থার তালাক
প্রশ্ন: ছোট্ট তুচ্ছ বিষয় ঝগড়া হয়। পরের দিন -আমি অফিস থেকে আসার পথে মদ্যপ অবস্থায় থাকি এবং এর আগে আমি ১৬ টা খুবই শক্তিশালী ব্যাথার ঔসধ খাই আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে। ঝগড়ার মাঝে আমি রাগে এবং মদ্যপ অবস্থায় এবং ঔষধের বিষক্রিয়ায় আমার হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে একদম কোন বোধ ছিলনা। আমার ঐ অবস্থায় স্ত্রীকে সবার ভাষ্যমতে ৩ বার ৩ বার ৩ বার ৯ বার তালাক বলি। যা আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বলেছি এবং সজ্ঞানে বলিনি। উক্ত বর্ণনার সাক্ষ্য এবং সহমত আমার স্ত্রী করেছে।
![]() |
Photo from: pexels.com |
প্রশ্নকারীর সাক্ষর স্ত্রীর সাক্ষর
সম্মানিত প্রশ্নকারী!
বিবাহ বন্ধন মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর একান্ত প্রয়োজন ছাড়া তা ছিন্ন করা উচিত নয়। বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করার একান্ত প্রয়োজন দেখা দিলে সেক্ষেত্রে ইসলামের মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ করেই বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করা আবশ্যক।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর উপর তিন তালাক পতিত হয়ে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। কেননা একসাথে তিন তালাক দেওয়া, রাগের মাথায় তালাক দেওয়া বা মদ্যপ অবস্থায় তালাক দিলেও তালাক কার্যকর হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, স্বামীর জন্য এরূপ তিন তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে শরয়ী হালালা ব্যতীত দ্বিতীয়বার গ্রহণ করার কোন পথ নেই। শরয়ী হালালার সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে, তালাকপ্রাপ্তা নারী প্রথমে তার ইদ্দত পূর্ণ করবে, ঋতুবতী মহিলার ক্ষেত্রে ইদ্দত হল তিন ঋতু পরিমাণ সময়। গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে ইদ্দত হল, তার গর্ভস্থ সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত সময়। আর যারা ঋতুবতী নয় এবং গর্ভবতীও নয় তাদের ক্ষেত্রে ইদ্দত হলো, তিন মাস। উপরোক্ত নিয়মে ইদ্দত পালন করার পর কোন প্রকার শর্ত ছাড়াই নারী অন্য কোনো পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে। তারপর উভয়ের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীসুলভ সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার পর দ্বিতীয় স্বামী তাকে স্বেচ্ছায় তালাক দিলে অথবা তিনি (দ্বিতীয় স্বামী) মৃত্যুবরণ করলে পূর্বের ন্যায় ইদ্দত পালনের পর উভয়ে রাজী থাকলে, বিবাহের সকল শর্ত সাপেক্ষে ওই নারীকে তার প্রথম স্বামী গ্রহণ করতে পারবে। উল্লিখিত পদ্ধতি অবলম্বন ছাড়া তাদের ঘর-সংসার করার আর কোন পথ নেই।
কথিত হিল্লা বিবাহ, কন্টাক্ট বিবাহ ইত্যাদী শরীয়ত সম্মত নয়। এগুলোর মাধ্যমেও
তিনতালাক প্রাপ্তা স্ত্রী হালাল হবে না। কেননা, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) হীলা কারীকে এবং যার জন্য হীলা করা হয় তাকে লা’নত করেছেন।
الأدلة الشرعية
أخرج الإمام الترمذي في سننه - رقم الحديث 1120 : عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمُحِلَّ وَالْمُحَلَّلَ لَهُ
وفي الموطأ للإمام مالك الرقم 1272٣ المكتبة الاسلامية :أن سعيد بن المسيب وسليمان بن يسار سئلا عن طلاق السكران فقالا إذا طلق السكران جار طلاقه وإن قتل قتل.
وفي الفتاوى التاتارخانية 394/4 زكريا : وطلاق السكران واقع إذا سكر من الخمر أو النبيذ وهو مذهب أصحابنا .
وفي الفتاوى الهندية 1/420 الإتحاد : وطلاق السكران واقع إذا سكر من الخمر أو النبيذ وهو مذهب أصحابنا
وفي بدائع الصنائع 4/267 دار الحديث: أما السكران إذا طلق امرأته فإن كان سكره بسبب محظور بأن شرب الخمر أو النبيذ طوعا حتى سكر وزال عقله فطلاقه واقع عند عامة العلماء وعامة الصحابة .
وفي مجمع الأنهر ٢٠٣/٣ دار الإحياء: وشرط لغير ذلك رجلان أو رجل وامرأتان مالا كان الحق أو غير مال. كالنكاح والرضاع والطلاقة.
وفي الدر المختار ٢١٧/٢ زكريا: و يقع طلاق كل زوج بالغ عاقل ولو تقديرا (بدائع) ليدخل السكران
وفي بدائع الصنائع 4/296 دار الحديث: وأما الفصل الثالث وهوما إذا قال لها : أنت طالق كعدد ألف أو كعدد ثلاث أو مثل عدد ثلاث فهو ثلاث في القضاء وفيما بينه وبين الله تعالى ولو نوى غير ذلك فنيته باطلة
وفي كتاب النوازل ۲۲۳/۹ زکریا : نشہ کی حالت میں بھی طلاق واقع ہو جاتی ہے ۔پس اگر شوہر خود طلاق کا اقرار کرے یا دو گواہوں کے ذریعہ شوہر کے طلاق دینے کا ثبوت ہو جاۓ تو جتنی مرتبہ طلاق کا ثبوت ہو اتنی ہی مرتبہ طلاق کے وقوع کا حکم ہوگا، اور اگر کسی طرح طلاق کا ثبوت نہ ہوسکے کوئی طلاق واقع نہ ہو گی،
وفي فتاوى دارالعلوم ديوبند (Fatwa ID: 1016-835/D=12/1437) نشے کی حالت میں دی گئی طلاق صحیح مذہب کے مطابق واقع ہوجاتی ہے پس صورت مسئولہ میں جبکہ عورت اقرار کر رہی ہے اور شوہر بھی انکار نہیں کر رہا ہے عورت پر تین طلاق واقع ہو گئی، دونوں کا رشتہٴ نکاح بالکلیہ ختم ہوگیا، اب حلالہ شرعی کے بغیر دوبارہ نکاح نہیں ہوسکتا۔ طلاق السکران واقع ہدایہ :۲/۳۵۸ ، ط: تھانوی دیوبند۔ درالمختار: ۴/۴۴۴، ط: زکریا۔
উত্তর প্রদানে
মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমী
উস্তাজুল হাদিস ওয়াল ইফতা
জামিয়া ইমাম বুখারী, উত্তরা, ঢাকা
No comments