কেউ সালামের জবাব না দিলে তাকে সালাম দেওয়ার বিধান
لاَ تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلاَ تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا . أَوَلاَ أَدُلُّكُمْ عَلَى شَىْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ أَفْشُوا السَّلاَمَ بَيْنَكُمْ.
অর্থ: তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ না ইমান আনবে আর তোমরা ইমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না একে অন্যকে ভালোবাসবে। আমি কি তোমাদের এমন আমল বলে দিব না যা করলে তোমাদের পারস্পরিক ভালবাসার সৃষ্টি হবে? তা হলো, তোমরা নিজেদের মাঝে সালামের প্রসার ঘটাও। -সহীহ মুসলিম, হাদীস নং: ১০০
যেসকল ক্ষেত্রে সালাম দেওয়া নিষেধ আল্লামা ইবনে আবিদীন শামী এবং অন্যান্য ফোকাহায়ে কেরাম সেই ক্ষেত্রগুলো চিন্হিত করেছেন। তার কয়েকটি হলো,
القاضي إذا سلم عليه الخصمان، والأستاذ الفقيه إذا سلم عليه تلميذه أو غيره أوان الدرس، وسلام السائل، والمشتغل بقراءة القرآن، والدعاء حال شغله، والجالسين في المسجد لتسبيح أو قراءة أو ذكر حال التذكير. اهـ. وفي البزازية: لا يجب الرد على الإمام والمؤذن والخطيب عند الثاني، وهو الصحيح اهـ وينبغي وجوب الرد على الفاسق لأن كراهة السلام عليه للزجر فلا تنافي الوجوب عليه تأمل. هذا
অর্থ: বিচারককে যদি বাদী বিবাদী সালাম দেয়, ফকিহ উস্তাদকে দরস চলাকালীন যখন কোনো ছাত্র বা অন্য কেউ সালাম দেয়। ভিক্ষুক যদি সালাম দেয়, কুরআন তেলাওয়াতকারীকে এবং জিকিররত ব্যক্তিকে, মসজিদে জিকির-তাসবিহ পাঠরত ব্যক্তি এবং দ্বীনি আলোচনা শ্রবণরত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া নিষেধ। আর ফতোয়া বাযযাজিয়া গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, ইমাম যখন নামাজের ইমামতি করে, মুয়াজ্জিন যখন আজান দেয় এবং নির্ভযোগ্য মতানুসারে খতিব যখন দ্বিতীয় খুতবা দেয় তখন তাদের জন্য সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব নয়। ফাসেকের সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব। যদিও তাকে সালাম দেওয়া থেকে বিরত থাকার বিধানটা মূলত তার ওপর ধমকিস্বরূপ। কিন্তু তাই বলে সে সালাম দিলে ওই সালামের জবাব দেওয়ার আবশ্যকীয়তা বাঁধাগ্রস্ত হবে না।
খাযায়েন গ্রন্থে ইমাম জালালুদ্দীর সুয়ূতী রহ. সালামের জবাব দানে অনাবশ্যকীয় স্থানগুলো নির্ণয় করে বলেন,
رد السلام واجب إلا على … من في الصلاة أو بأكل شغلا
أو شرب أو قراءة أو أدعية … أو ذكر أو في خطبة أو تلبية
أو في قضاء حاجة الإنسان … أو في إقامة أو الآذان
أو سلم الطفل أو السكران … أو شابة يخشى بها افتتان
أو فاسق أو ناعس أو نائم … أو حالة الجماع أو تحاكم
أو كان في الحمام أو مجنونا … فواحد من بعدها عشرونا."
সূত্র: ফতোয়া শামী: নামাজ অধ্যায়, যেসব ক্ষেত্রে সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব নয়। ১/৬১৮ এইচ এম সাঈদ
ফতোয়া মাহমুদিয়া গ্রন্থে উল্লেখ আছে, সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব। কাজেই কোনো ব্যক্তি যদি বিনা ওজরে সালামের জবাব না দেয় তাহলে সে গুনাহগার হবে। কেননা কুরআনুল কারিমে সুরা নিসা-এর ৮৬ নং আয়াতে বর্ণিত আছে
وَاِذَا حُیِّیۡتُمۡ بِتَحِیَّةٍ فَحَیُّوۡا بِاَحۡسَنَ مِنۡهاۤ اَوۡ رُدُّوۡهَا ؕ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ حَسِیۡبًا
অর্থ: যখন কেউ তোমাদের সালাম দেয় তখন তোমরা (তাকে) তদ্বপেক্ষা উত্তম শব্দে জবাব দিয়ো কিংবা (অন্ততপক্ষে) সেই শব্দেই তার জবাব দিয়ো। কেননা নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা সবকিছুর হিসাব রাখেন।
তবে ফোকাহায়ে কেরাম লিখেছেন, যদি কোনো ব্যক্তি কুরআন তেলাওয়াত করতে থাকে, কোনো দ্বীনি দারসে মশগুল থাকে অথবা পানাহার ইত্যাদীতে ব্যস্ত থাকার কারণে সালামের জবাব না দেয় তাহলে তিনি গুনাহগার হবেন না। কিন্তু উপরোক্ত ব্যস্ততা ছাড়া স্বাভাবিক অবস্থায় যদি কেউ তাকে সালাম দেয় কিন্তু সে জবাব না দেয় তাহলে ওই ব্যক্তি গুনাহগার হবে।-ফতোয়া মাহমুদিয়া: ১০/৩৮৭ জমিয়ত পাবলিকেশন্স, পাকিস্তান।
No comments